পল্লী পরিষদ কি । পল্লী পরিষদ বলতে কী বুঝ

পল্লি পরিষদ কি । পল্লি পরিষদ বলতে কী বুঝ
পল্লি পরিষদ কি । পল্লি পরিষদ বলতে কী বুঝ

পল্লি পরিষদ কি । পল্লি পরিষদ বলতে কী বুঝ

  • অথবা, পল্লি পরিষদ সম্পর্কে ধারণা দাও।

উত্তর : ভূমিকা : ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এক রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাপ্রধান লে. জে. হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা দখল করেন। এরশাদের সরকার গ্রামীণ উন্নয়নের লক্ষ্যে পল্লি পরিষদ গঠনের আইন পাস করেন। 

প্রতিটি গ্রামে একটি পল্লি পরিষদ গঠন করা হয়। পরিষদের মেয়াদ ছিল ৩ বছর । পল্লি পরিষদ মূলত গ্রামের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং উন্নয়নমূলক বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতো।

পল্লি পরিষদ : হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জিয়া হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৮২ সালে শাসনক্ষমতা দখল করে স্থানীয় শাসন কাঠামোতে বিভিন্ন পরিবর্তন সাধন করেন। 

১৯৮৯ সালে এক আইন পাস করার মাধ্যমে এরশাদ সরকার স্বনির্ভর গ্রাম সরকার বাতিল ঘোষণা করে এর পরিবর্তে পল্লি পরিষদ গঠনের ঘোষণা দেন। 

এ আইন মোতাবেক প্রতিটি গ্রামে একটি *পল্লি পরিষদ' গঠন করা হয়। এরশাদের পল্লি পরিষদের গঠনের জন্য তাকে ‘পল্লিবন্ধু” নামে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। 

গঠন : এরশাদ প্রবর্তিত পল্লি পরিষদের গঠন ছিল নিম্নরূপ :

১. পল্লি পরিষদ ৯ জন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হতো। তার মধ্যে ২ জন মহিলা সদস্য এবং একজন প্রধান থাকতেন। 

২. পল্লি পরিষদের প্রধান ও সদস্য নির্বাচনের ভিত্তি ছিল 'পল্লি পরিষদ আইন' ১৯৮১।

৩. পল্লি পরিষদের নির্বাচন তত্ত্বাবধান করতেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ।

৪. পল্লি পরিষদের সদস্যগণের মধ্য থেকে একজন সচিব নির্বাচিত হতো।

৫. পল্লি পরিষদের মেয়াদ ছিল তিন বছর।

৬. পল্লি পরিষদের সদস্য হওয়ার জন্য যোগত্যাসমূহ ছিল নিম্নরূপ :

ক. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হতো।

খ. সংশ্লিষ্ট গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

গ. বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হওয়া ।

৭. পল্লি পরিষদের সদস্য হওয়ার অযোগ্যতাসমূহ ছিল নিম্নরূপ :

ক. বাংলাদেশের নাগরিকত্ব হারানো বা ত্যাগ করা ।

খ. সংশ্লিষ্ট গ্রাম ত্যাগ করলে।

গ. ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্য হলে।

ঘ. ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে।

ঙ. আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা হলে । 

চ আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হলে।

কার্যাবলি : পল্লি পরিষদের প্রধান কাজগুলো ছিল নিম্নরূপ : 

ক. গ্রামীণ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা ।

খ. গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা ।

গ. আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারি বাহিনীকে সহায়তা করা ।

ঘ. গণশিক্ষার ব্যবস্থা করা।

ঙ. কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গ্রামীণ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করার লক্ষ্যে এরশাদ সরকার পল্লি পরিষদের প্রবর্তন করেন। পল্লি পরিষদের মূল কাজ ছিল গ্রামীণ উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করা। 

পল্লি পরিষদ গঠিত হতো ৯ জন সদস্য নিয়ে এবং এর মেয়াদ ছিল তিন বছর। এরশাদের প্রবর্তিত পল্লি পরিষদ তৎকালীন গ্রামীণ সমাজে সাড়া জাগিয়েছিল । তাই এরশাদকে পল্লিবন্ধু বলা হতো । 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url