নারায়ণগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত?

নারায়ণগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত অনেকেই আমরা জানি না। তাই আজকে আমি আপনাদের এই ব্লগের মাধ্যমে জানাবো কিসের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা বিখ্যাত? সেই সাথে জানবো নারায়ণগঞ্জ জেলার ইতিহাস, দর্শনীয় স্থান, এবং বিখ্যাত খাবারের নাম।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদে ভালো আছি। আজকের নতুন টপিকে আপনাকে স্বাগতম!

নারায়ণগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

বাংলাদেশে প্রতিটি জেলায় কোনো না কোনো কারণে বিখ্যাত। যেহেতু আজকে আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা নিয়ে আজকের বিষয় তাই আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা সম্পর্কে জানবো।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সোনালী আঁঁশ পাটের জন্য বিখ্যাত। তাছাড়া সোনালী আঁঁশ পাটের জন্য নারায়ণগঞ্জ প্রাচ্যের ড্যান্ডি নামেও পরিচিত। নারায়ণগঞ্জ শুধু সোনালী আঁশের জন্য বিখ্যাত নয়। অনেক দর্শনীয় স্থান এবং কিছু খাবারের জন্যও বিখ্যাত।

ঢাকা বিভাগের একটি জেলা হল নারায়ণগঞ্জ। এই জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ শহরেই।  শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ। আয়তনে দিক দিয়ে ৬৮৩.১৪ বর্গকিলোমিটার। এখানে প্রায় ২৯,৪৮,২১৭ মানুষের বসবাস রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ইতিহাস

হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বিকন লাল পান্ডে (বেণুর ঠাকুর বা লক্ষীনারায়ণ ঠাকুর নামে ও পরিচিত) ১৭৬৬ সালে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিকট থেকে এ অঞ্চলের মালিকানা গ্রহণ করেন। তিনি প্রভু নারায়ণের সেবার ব্যয়ভার বহনের জন্য একটি উইলের মাধ্যমে শীতলক্ষা নদীর তীরে অবস্থিত মার্কেটকে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন। তাই পরবর্তী কালে এ স্থানের নাম হয় নারায়ণগঞ্জ।

নারায়ণগঞ্জ মহকুমা সৃষ্টি ১৮৮২ সালে। ঢাকা জেলার সাবেক মহকুমা থেকে ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলায় উন্নীত হয়। নারায়ণগঞ্জ কালেক্টর ভবন শহরের মীরজুমলা রোডে অবস্থিত ছিল।

পরবর্তীতে শহরের কোলাহল বৃদ্ধি এবং জেলা প্রশাসনের কর্মপরিধি ব্যাপক হলে শহর থেকে দূরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কের পাশে চানমারী এলাকায় জেলা প্রশাসকের কায্যালয় স্থানাস্তর করা হয়।  ১৯৮৪ সালে নারায়ণগঞ্জ বিশেষ জেলা শ্রেণীর আওতায় জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

এবার আপনাদের জানাবো নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে। তাই আপনারা যারা জানেন না আমাদের সাইট থেকে খুব সহজে জেনে নিতে পারবেন।
  • জিন্দা পার্ক
  • বাংলার তাজমহল
  • বাংলার পিরামিড
  • কাঞ্চন সেতু
  • কাঁচপুর সেতু
  • বারদী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির
  • লাঙ্গলবন্দ প্রাচীন মন্দির
  • লোকশিল্প জাদুঘর 
  • সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি
  • রাসেল পার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানা
  • পাঁচ পীরের সমাধি
  • কাঠ গোলাপ স্থান
  • ঈসা খাঁ জমিদার বাড়ি
  • নীল কুঠি
  • সোনাকান্দা স্টেডিয়াম
  • লক্ষী নারায়ণ কটন মিল
  • কাইকারটেক হাট
  • বোস কেবিন (১৯৪২)
  • পন্ডস গার্ডেন
  • এডভ্যাঞ্চার ল্যান্ড

নারায়ণগঞ্জ কোন খাবারের জন্য বিখ্যাত

অন্যন্য জেলার মতই নারায়ণগঞ্জও বিখ্যাত কিছু খাবারের জন্য সুনাম রয়েছে। আর তার মধ্যে রয়েছে জগৎবন্ধু মিষ্টান্ন ভান্ডার, আদি আদর্শ মিষ্টান্ন ভান্ডার এই দুই দোকানের মিষ্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সবথেকে বিখ্যাত।

এই দুই দোকানের মিষ্টি এতটাই সুস্বাদু যে কেউ একবার খেয়ে উঠতে পারবে না। শুধু মিষ্টি নয়, দই, রসোগোল্লা, ক্ষিরচপ, হাড়িভাঙ্গা ইত্যাদি মিষ্টির জন্য খুবই পরিচিতি লাভ করেছে। তাই এই জগৎবন্ধু মিষ্টান্ন ভান্ডার সমগ্র নারায়ণগঞ্জে বিখ্যাত।

নারায়ণগঞ্জ জেলা উপজেলার নাম

নারায়ণগঞ্জ জেলায় উপজেলা রয়েছে ৫টি। 
  • নারায়ণগঞ্জ সদর
  • বন্দর
  • সোনারগাঁও
  • রূপগঞ্জ
  • আড়াইহাজার
এছাড়াও এই জেলায় ইউনিয়ন ৪১, মৌজা ৮৮১, গ্রাম ১৩৭৪, পৌরসভা ২, ওয়ার্ড ১২, মহল্লা ১১৫টি রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা

স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান ছিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীন সুসংঘঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার এম.এ গনি, মোহাম্মদ আলী, মোঃ নাসির উদ্দিন, মহিউদ্দিন রতন, নুরুল ইসলাম, মোঃ সামসুল হক, মমিনুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

সেই সময় পাকসেনাদের দখলে ছিল ফতুল্লার পঞ্চবটিতে ডালডার মিল নামের এলাকা। প্রতিরাতে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে যমুনা জেটির কাছে নিয়ে আসত এবং গুলিবর্ষণ করে হত্যার পরে লাশগুলো বুড়িগঙ্গা নদীর জলে নিক্ষেপ করে ভাসিয়ে দেওয়া হতো বলে জানা যায়।

মুক্তিযোদ্ধা দুলাল ও আমিনুর ডিক্রিরচর ও কানাই নগরে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি শক্তিশালী গ্রুপ তৈরী করেন। বাবুরাইলের মুক্তিযোদ্ধা শরিফুল আশ্রাফ যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হন।
আরও পড়ুনঃ ৬৪ জেলার নাম তালিকা সহ - বাংলা ও ইংরেজি
নারায়ণগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত - এই ব্লগটি পুরোটা পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। যদি আপনাদের এই ব্লগের উপর কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আশা করি উত্তর পাবেন। এছাড়াও আপনাকে যদি কোন ব্লগ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে কমেন্ট করুন। আমরা আপনাদের সেই ব্লগ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করবো।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url